হালাল রুজির দোয়া

আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনী বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক

ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো

 ডিজিটাল কম্পিউটার কত প্রকার

 ডিজিটাল কম্পিউটার কি, সুপার কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার ও পার্সোনাল কম্পিউটার সম্পর্কে জানতে পারবে।

ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো  

                  ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ নিম্নে আলোচনা করা হলো:

           আকার, আয়তন, কাজ করার ক্ষমতা, স্মৃতি ও কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল কম্পিউটারেকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

১।  সুপার কম্পিউটার।

২।  মেইনফ্রেম কম্পিউটার।

৩।  মিনি কম্পিউটার।

৪।  মাইক্রো কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।

ডিজিটাল কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

১।  সুপার কম্পিউটার: যে কম্পিউটার আকৃতির দিক দিয়ে সর্ববৃহৎ,  বিশাল পরিমান তথ্য সংরক্ষণ করা যায় এবং অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কার্য সম্পাদন করা যায় তাকে সুপার কম্পিউটার বলে। সুপার কম্পিউটার অনেক প্রসেসর কাজ করে বলে খুব দ্রুত গতিতে ডাটা প্রসেস করা যায়।

সুপার কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

নিম্নে সুপার কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো:

১।  আকৃতির দিক দিয়ে খুবই বড় এবং শক্তিশালী।

২।  সুপার কম্পিউটার এক সাথে একাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে।

৩।  এ ধরনের কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে।

৪।  এ ধরনের কম্পিউটার পর পর ১০ লক্ষ লাইনে লেখা সুবিশাল কর্মসূচীকে নিজের অস্থায়ী  স্মৃতিশক্তির মধ্যে সঞ্চয় করে রেখে সেই অনুযায়ী কাজ করে ফলাফল জানিয়ে দিতে পারে।

৫।  অনেক শক্তিশালী মানের এ কম্পিউটারের অনেক বড় বড় এবং জটিল ও সূক্ষ্ম কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।

সুপার কম্পিউটারের ব্যবহার: সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ, নভোজান, জঙ্গী বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ,  মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ: ইন্টেল কর্পোরেশনের প্যারাগন, জাপানের নিপ্পন ইলেকট্রনিক কোম্পানির Super SX II, Cyber 205 ইত্যাদি হচ্ছে সুপার কম্পিউটার।


২। মেইনফ্রেম কম্পিউটার: সুপার কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট কম্পিউটারকে বলা হয় মেইনফ্রেম কম্পিউটার। এই কম্পিউটার অনেক বেশী কাজ করতে পারে। এ ধরনের কম্পিউটারে সব রকম পেলিফেরাল ব্যবস্থা,  সব রকম হাই লেভেল ভাষা এবং সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়।

মেইনফ্রেম কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য: 

সুপার কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট কম্পিউটারকে বলা হয় মেইনফ্রেম কম্পিউটার। এই কম্পিউটার অনেক বেশী কাজ করতে পারে। এ ধরনের কম্পিউটারে সব রকম পেলিফেরাল ব্যবস্থা,  সব রকম হাই লেভেল ভাষা এবং সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়।

নিম্নে মেইনফ্রেম কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো:

১।  সুপার কম্পিউটার ছাড়া অন্যান্য কম্পিউটারের তুলনায় অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে।

২।  এ ধরনের কম্পিউটারের অনেক বড় বড় এবং জটিল  ও সূক্ষ্ম কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।

৩।  মেইনফ্রেম কম্পিউটার হচ্ছে এমন একটি কম্পিটার যার সঙ্গে অনেকগুলো ছোট ছোট কম্পিউটারযুক্ত করে একসঙ্গে অনেক ব্যবহারকারী কাজ করতে পারে।

৪।  বিভিন্ন ধরনের সহায়ক মেমরির সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে।

৫।  মেমরির ধারণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশী।

মেইনফ্রেম কম্পিউটারের ব্যবহারের ক্ষেত্র: বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। ব্যাংক,  বীমা, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং অগ্রসর গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। বিপুল তথ্য-আদান-প্রদান,  সংরক্ষণ এবং জটিল ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং বৈজ্ঞানিক কর্ম তৎপরতা পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্লেষণ ক্ষেত্রে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে।

উদাহরণ: আইবিএম ৩০৩৩, Univacc1180, Cyber 170 ইত্যাদি হচ্ছে মেইনফ্রেম কম্পিউটার।


৩।  মিনি কম্পিউটার: মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কম্পিউটারকে বলা হয় মিনি কম্পিউটার। এটি কে একটি বড় ধরনের টেবিলের উপর বসানো হয়। এর সাথে কিছু সংখ্যক ছোট কম্পিউটার যুক্ত করে একসঙ্গে কিছু লোক কাজ করতে পারে। মেইনফ্রেম কম্পিউটার এবং মিনি কম্পিউটারের একই ধরনের কাজ করা যায়।

মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট এবং মেইনফ্রেমের তুলনায় কাজের ক্ষমতা ও কম। যেসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না, আবার কাজের পরিমাণ ও বেশি,  সেসব প্রতিষ্ঠান মিনিফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। যেমন-ক্লিনিক,  হাসপাতাল, বড় গার্মেন্টস কারখানা, বহুজাতিক কোম্পানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে মিনিফ্রেম কম্পিউটারের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

উদাহরণ:  IBM S/34. IBM S/36. PDP 11, LCR S/9290 ইত্যাদি।


৪।  মাইক্রো কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার: ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ইনটেল নামক একটি প্রতিষ্ঠান প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করে। এ মাইক্রোপ্রসেসরটি ইনটেল-৪০০৪ নামে পরিচিত ছিল। এর আগে কম্পিউটার তৈরি করতে অসংখ্য ডায়োড, রেজিস্টার, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি ব্যবহার করা হতো। ফলে কম্পিউটারে আকার-আয়তনে হতো বিশাল আকৃতির এবং দামেও পড়তো অনেক বেশী। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাছাড়া ঐসব কম্পিউটার শুধু বিশেষজ্ঞরাই ব্যবহার করতে পারতেন।  একাত্তরের পরে মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি কম্পিউটার আকারে ছোট হয়ে আসে এবং দামও কমে যায়।

ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং সস্তা  কম্পিউটার হচ্ছে মাইক্রোকম্পিউটার। মাইক্রো অর্থ ক্ষুদ্র,  ক্ষুদ্রাকৃতির মাইক্রোপ্রসেসর চিপ দিয়ে গঠিত হয় বলে একে মাইক্রো কম্পিউটার বলে। একটি মাইক্রো কম্পিউটার একটি প্রধান মাইক্রোপ্রসেসর, প্রধান মেমরি সহায়ক মেমরি এবং ইনপুট আউটপুট যন্ত্রপাতি নিয়ে গঠিত। মাইক্রোপ্রসেসর প্রধানত একক প্রসেসর বিশিষ্ট হয়ে থাকে। একে পাসোনাল কম্পিউটারও বলা হয়। অফিস আদালত, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মাইক্রো কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া এটি রক্ষণাবেক্ষণ সহজ, আকারে ছোট এবং দামেও সস্তা।

উদাহরণ: IBM PC, Apple, Macintoch, Pentium-I, Pentium-II, Pentium-III, ইত্যাদি হলো মাইক্রো কম্পিউটারের উদাহরণ। 

মাইক্রো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য:

 নিম্নে এর বৈশিষ্ট্যবলী উল্লেখ করা হলো:-

১। এ ধরনের কম্পিউটার আকারের দিক দিয়ে খুবই ছোট।

২। এ ধরনের কম্পিউটার সহজে বহনযোগ্য।

৩। দাম‌‍ের দিক দিয়ে অনেক কম।

৪। রক্ষণাবেক্ষণ তুলনামূলকভাবে সহজ।

৫। সিপিইউ হিসেবে মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয়।

প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতির সাথে সাথে মাইক্রো কম্পিউটারের আকৃতিতে নানারকম পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের ব্যবহারিক সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন আকৃতির মাইক্রো কম্পিউটার বাজারে এসেছে। যেমন:

(১) ল্যাপটপ কম্পিউটার, (২) নোটবুক কম্পিউটার এবং (৩)  ডেস্কটপ কম্পিউটার।


উপরের আলোচনা থেকে ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেনিবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও শিখতে পারবে। বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ২য় বর্ষ পরীক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিষয়ে ডিজিটাল কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url