হালাল রুজির দোয়া

আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনী বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি | হার্ডওয়্যার কত প্রকার

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি 

আপনি কি জানেন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? হার্ডওয়্যার কত প্রকার? হার্ডওয়্যার কিভাবে কাজ করে? আপনি যদি এই প্রশ্নগুলোর খুঁজে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় আছেন। 

একটি কম্পিউটারে প্রধানত দুটি অংশ থাকে। একটি হার্ডওয়্যার এবং অন্যটি হল সফ্টওয়্যার। সফটওয়্যার কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।সফটওয়্যার ছাড়া ব্যবহারকারীর পক্ষে কম্পিউটারে কোনো কাজ করা সম্ভব না । ফটোশপ, ব্রাউজার, অ্যান্টি ভাইরাস, এমএস অফিস ইত্যাদি সবই কম্পিউটার সফটওয়্যারের উদাহরণ।


সকল সফ্টওয়্যারের হার্ডওয়্যার ছাড়া কোন কাজ করতে পারে না। আপণী কি বোর্ড ছাড়া WORD লিখবেন কীভাবে? এমনকি একটি মাউস ছাড়া ফটোশপে কিভাবে কাজ করবেন? এবার বুঝতে পেরেছেন হার্ডওয়্যার ছাড়া সফ্টওয়্যার কোন কাজই করতে পারে না। কীবোর্ড, মাউস , হার্ডডিস্ক, মনিটর, মাদারবোর্ড , সিপিইউ , ইউপিএস, স্পিকার এগুলো হার্ডওয়্যারের উদাহরণ।



 আমরা কখনই হার্ডওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার সম্পর্কে চিন্তা করতে পারি না। এখন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি? হার্ডওয়্যার কত প্রকার? 


হার্ডওয়্যার কি (What is Hardware)

হার্ডওয়্যার হল কম্পিউটারের সেই অংশ যা আমরা দেখতে এবং স্পর্শ করতে পারি।  এটি কম্পিউটারের এমন উপাদান যা আমরা স্পর্শ করতে পারি, এবং এই উপাদানটি সার্কিট বোর্ড, IC এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ‍উপাদান নিয়ে গঠিত।

একটি কম্পিউটারের সমস্ত ইনপুট, আউটপুট, প্রসেসিং এবং স্টোরেজ ডিভাইস সবই হচ্ছে হার্ডওয়্যার


হার্ডওয়্যার ছাড়া কম্পিউটারের অস্তিত্ব নেই। আপনি এটি ছাড়া কোনো সফ্টওয়্যারও ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি Software কম্পিউটারের আত্মা হয় তবে শরীর হচ্ছে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার। কিন্তু বাস্তবে হার্ডওয়্যার থেকে যেকোনো কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।


যেকোন হার্ডওয়্যার ডিভাইসকে সচল করার জন্য সফটওয়্যার এর প্রয়োজন পড়ে। সফটওয়্যার ছাড়া কোন ইলেকট্রনিক্স হার্ডওয়্যার ডিভাইস কাজ করতে পারে না। সেটি হোক কম্পিউটার, মোবাইল, অথবা যেকোন ইলেকট্রনিক্স হার্ডওয়্যার ডিভাইস হোন না কেন।


কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের প্রকার ও কি কি (Type of computer Hardware)

হার্ডওয়্যারের প্রকারভেদ

 আপনি ইতিমধ্যেই জেনেছেন যে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি। আপনি এটিও জানতে পেরেছেন যে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বিভিন্ন ধরণের হয়ে থোকে। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইস সমুহকে সাধারণত প্রধান চারটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে নিচে উদাহরণসহ তাদের বর্নণা করা হল।



1. ইনপুট ডিভাইস

ইনপুট ডিভাইস হল সেই সব ডিভাইস যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ডেটা বা নির্দেশাবলী কম্পিউটারে ইনপুট করতে পারি। ইনপুট ডিভাইস কম্পিউটার এবং মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করে। কম্পিউটারে অনেক ইনপুট ডিভাইস আছে, এই ডিভাইসগুলো কম্পিউটারকে বিভিন্ন কাজের নির্দেশ দেয় কি করতে হবে? ইনপুট ডিভাইসগুলি অনেক ধরণের হয় এবং সকলের নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে, যেমন: মাউস আমাদের কম্পিউটারকে নির্দেশাবলী দিয়ে থাকে।


উদাহরণ: মাউস, কীবোর্ড, স্ক্যানার এবং মাইক্রোফোন ইত্যাদি।


2. আউটপুট ডিভাইস

একটি আউটপুট ডিভাইস এমন একটি ডিভাইস যা কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করার পরে, যে ফলাফল প্রাপ্ত হয় সেই ফলাফলটি দৃশ্যমান করার জন্য যেসকল ডিভাইস ব্যবহৃার করা হয় তাদরেকে সাধারণত আউটপুট ডিভাইস বলা হয়। কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের আউটপুট ডিভাইস থাকে।

উদাহরণ: মনিটর, প্রিন্টার, হেডফোন, স্পিকার এবং প্রজেক্টর ইত্যাদি।


3. প্রক্রিয়াকরণ ডিভাইস

আপনি যখন একটি কীবোর্ড বা অন্য কোনো ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে একটি কম্পিউটারে ডেটা পাঠান, তখন সেই ডেটাটি একটি আউটপুট ডিভাইসে পাঠানোর আগে একটি মধ্যবর্তী পর্যায়ে চলে যায়। এটি সেই পর্যায় যেখানে ডাটা সমুহকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াকরণ করা হয় এবং প্রক্রিয়াকরণ শেষে তার ফলাফল প্রদান করা হয়। প্রক্রিয়াকরণ ডিভাইস কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অংশ, যা এই মধ্যবর্তী অবস্থা পরিচালনা করে।


উদাহরণ: CPU (সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট), GPU (গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট), এবং নেটওয়ার্ক কার্ড।

4.স্টোরেজ ডিভাইস

এটি একটি হার্ডওয়্যার ডিভাইস যা ডেটা সংরক্ষণ করার কাজ করে। স্টোরেজ ডিভাইস যে কোনো কম্পিউটারের মূল উপাদানগুলির মধ্যে একটি। এটি কম্পিউটারে সমস্ত ধরণের ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশন সংরক্ষণ করে।


একটি কম্পিউটারে দুই ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস রয়েছে:


ক)প্রাথমিক স্টোরেজ ডিভাইস

এই স্টোরেজ ডিভাইসটি অস্থায়ীভাবে ডেটা ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি আকারে বেশ ছোট। যার কারণে এটি কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ। প্রাথমিক স্টোরেজ ডিভাইসে দ্রুততম ডেটা অ্যাক্সেসের গতি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে RAM, ROM এবং ক্যাশে মেমরি ।


খ)সেকেন্ডারি স্টোরেজ ডিভাইস

এই মেমরি ডিভাইসগুলির বড় স্টোরেজ ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও, এটি স্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষণ করে। এটি কম্পিউটারের ভিতরে বা বাইরে উপস্থিত থাকে। এর প্রধান উদাহরণ হল হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (এইচডিডি), সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি), অপটিক্যাল ডিস্ক ড্রাইভ, ফ্ল্যাশ মেমরি এবং ইউএসবি ডিভাইস।


বিভিন্ন ধরণের কম্পিউটার হার্ডওয়্যার

আপনি অবশ্যই দুই ধরনের কম্পিউটার সিস্টেম দেখেছেন একটি হল ল্যাপটপ এবং অপরটি হল ডেস্কটপ। ল্যাপটপের সমস্ত হার্ডওয়্যার উপাদান সমুহ একসাথে সংযুক্ত করা থাকে। কিন্তু ডেস্কটপের প্রায় সকল হার্ডওয়্যার উপাদানগুলো আলাদা আলাদা ভাবে সংযুক্ত করা থাকে। কিন্তু এই দুটি ডিভাইস এর প্রায় একই রকম হার্ডওয়্যার ডিভাইস রয়েছে। চলুন কম্পিউটার এর সকল হার্ডওয়্যার ডিভাইস সম্পর্কে জানি।


কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইস সমুহক সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে অভ্যন্তরিণ হার্ডওয়্যার ডিভাইস এবং বাহ্যিক হার্ডওয়্যার ডিভাইস। নিচে কম্পিউটারে সকল হার্ডওয়্যার ডিভাইস সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হল।

1. কীবোর্ড (Keyboard)

কীবোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস। এটি একটি কমন ব্যবহৃত হার্ডওয়্যার ডিভাইস, এটি ছাড়া আপনি কম্পিউটারে কোন ডাটা ইনপুট দিতে পারবেন না। এটির সাহায্যে আমরা কম্পিউটারের সমস্ত লেখা লেখির কাজ করতে পারি। আপনি এখন যে লেখা পড়ছেন তাও এই কীবোর্ড দিয়ে লেখা। আপনি এই ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসটি দেখতে এবং হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারেন। এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিভাইসগুলির মধ্যে একটি। এই ডিভাইসটি সধারণত USB পোর্টে ইনস্টল করা হয়ে থাকে।


2. মাউস (Mouse)

এটি একটি পয়েন্টিং ডিভাইস এবং কার্সার মুভিং ডিভাইস নামেও পরিচিত। একটি মাউসে 2টি, 3টি বা আরো বেশি বাটন থাকতে পারে। যেমন ডান, বাম এবং মাঝের বাটনগুলি (Left key, Right Key, and Roller key) । মাউসটি সমতল পৃষ্ঠে বা মাউস প্যাডে রাখা হয়। এটি সাধারণত কার্সার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়।


3. স্ক্যানার (Scannar)

এটি একটি কম্পিউটারের বাহ্যিক হার্ডওয়্যার ডিভাইস। স্ক্যানার ব্যবহার করে, লিখিত কাগজপত্র এবং ফটোগ্রাফ ডিজিটাল ছবিতে রূপান্তরিত করা যায় । 

সেই সাথে মেমরিতে সংরক্ষণ করা যায়। স্ক্যানারের মাধ্যমেও ডকুমেন্ট স্ক্যান করে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা যায়। একে বলা হয় Extenal Hardware ডিভাইস বলা হয়।


4. মনিটর (Monitor)

কম্পিউটার মনিটর হল একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা কিছু কম্পিউটারে আউটপুট দেখাতে ব্যবহৃত হয়। এটি দেখতে অবিকল টিভির মতো। একটি বড় এবং ভাল ডিসপ্লে রেজোলিউশন আমাদের একটি ভাল ছবি দেখায়। এই হার্ডওয়্যারটি ল্যাপটপে ছোট এবং ডেস্কটপে আপনি আপনার পছন্দ মত সাইজের নিতে পারেন। কম্পিউটার মনিটর একটি আউটপুট ডিভাইস। 


5. স্পিকার (Computer Speaker)

স্পিকার একটি এক্সটার্নাল হার্ডওয়্যার ডিভাইস। এটি ব্যবহার করে আমরা শব্দ শুনতে পারি। এটি কম্পিউটারের কোন আউটপুটকে শব্দ আকারে আউটপুট দেয়। আজকাল এটি সিস্টেমে অন্তর্নির্মিত থাকে, এবং আমরা সচরাচর এটি এক্সটারনাল ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।


6. মাদারবোর্ড (Motherboard)

মাদারবোর্ড যাকে আমরা মেইন বোর্ডও বলে থাকি। এটি কম্পিউটারের প্রধান অংশ। এটিকে যদি আপনি দেখতে চান তাহলে আপনাকে কম্পিউটার খুলতে হবে। এটি PCB বা প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (Printed Circuit Board) নামে একটি বোর্ড। এই বোর্ড কম্পিউটারের বিভিন্ন উপাদান ধারণ করে থাকে এবং এই সমস্ত উপাদান গুলির মধ্যে হল CPU, RAM , হার্ড ডিস্ক, smps পোর্ট, গ্রাফিক্স কার্ড এবং আরো অন্যান্য।

7. প্রিন্টার (Printer)

প্রিন্টার হল একটি আউটপুট ডিভাইস যা কম্পিউটার থেকে প্রাপ্ত তথ্য কাগজে মুদ্রণ করে বা প্রিন্ট করে। কাগজে আউটপুটের এই অনুলিপিকে হার্ড কপি বলে। যে তথ্যগুলি আমরা প্রিন্ট করতে চাই সেই তথ্যগুলি প্রিন্টারেই সংরক্ষণ করা যেতে পারে, তাই প্রিন্টারের একটি মেমরিও থাকে যেখান থেকে এটি ধীরে ধীরে ফলাফল প্রিন্ট করে।


8. CPU (Central Processing Unit)

CPU এর পুরো নাম সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। এটি নিজে কোনো হার্ডওয়্যার নয়, এর ভেতরে রয়েছে ছোট-বড় অনেক হার্ডওয়্যার। একে কম্পিউটারের মস্তিষ্কও বলা হয়। এটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের মন যা করতে বলে আমরা তাই করি। প্রধানত এর 3টি উপাদান হল ALU, CU এবং MU। ALU যাকে বলা হয় অ্যারিথম্যাটিক এবং লজিক্যাল ইউনিট। CU কন্ট্রোল ইউনিট এবং MU মেমরি ইউনিট। ALU গাণিতিক গণনা যেমন যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ। LU তুলনামূলক অপারেশন করে। যেমন এর চেয়ে কম, এর চেয়ে বড়, সমান এবং সমান নয়। MU এর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক মেমরি রয়েছে।


9. RAM (Ram)

RAM এর পুরো নাম Random Access Memory. একে ডাইরেক্ট অ্যাকসেস মেমোরিও বলা হয়, এই মেমরিটি সাধারণত কম্পিউটারের সেকেন্ডারি মেমোরির চেয়ে কম সাইজের হয়ে থাকে। এটি কম্পিউটারের প্রধান মেমরিও বলা হয়ে থাকে। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে এটি ২জিবি থেকে শুরু করে ১২৮ জিবি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মোবাইল এর ক্ষেত্রে এটি ১GB, ২GB, ৩GB, ৬GB পর্যন্ত হয়ে থাকে। 



10. সম্প্রসারণ কার্ড বা অতিরিক্ত কার্ড

আমরা জানিযে মাদারবোর্ডে আমরা PCI Slot ব্যবহার করে আরো অতিরিক্ত কিছু কার্ড ব্যবহার করতে পারি। যেগুলি ব্যবহার করে আমরা আমাদের কম্পিউটার এর কর্মক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে নিতে পারি, এবং অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পেতি পারি। এসকল কার্ড এর মধ্যে রয়েছে গ্রাফিক্স কার্ড, নেটওয়ার্ক কার্ড, সাউন্ড কার্ডসহ ‍আরো অনেক।


এ সকল কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইস ছাড়াও আরো অনেক হার্ডওয়্যার ডিভাইস রয়েছে এবং দিন দিন এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‍মানুষের দৈনন্দিক কাজকে আরো সহজ করার জন্য দিন দিন নতুন নতুন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ডিভাইস তৈরি হচ্ছে।


হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার মধ্যে পার্থক্য

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url