কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন কবে | কর্ণফুলী টানেল কত কিলোমিটার
কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন কবে
আজকে আমরা জানব কর্ণফুলী টানেল কত কিলোমিটার, কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য কত কিমি, কর্ণফুলী টানেল কোন জেলায় অবস্থিত,কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য কত, কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন কবে,কর্ণফুলী টানেল, Karnaphuli tunnel.
কর্ণফুলী টানেল কত কিলোমিটার,কর্ণফুলী টানেল বিস্তারিত তথ্য।কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল হল কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন একটি সুড়ঙ্গ সড়ক বা টানেল। কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল কর্ণফুলী নদীর দুই তীরকে সংযুক্ত করবে।এই টানেলের মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে।
কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য কত কিমি
এই টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার ও ব্যাস হবে 10.80 মিটার বা 35.4 ফুট।
এই নদীর তলদেশে কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩ হাজার ৪০০ মিটার (প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার)। এই টানেলের হিসেব মাইলে পরিমাপ করলে হবে ২.১৩ মাইল। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে গাড়ি যাওয়ার জন্য একটি এবং আসার জন্য আরেকটি টিউব তৈরি হবে, যা টানেল নামে পরিচিত। প্রতিটি টিউবের প্রস্থ হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার। দুটি টিউবে গাড়ি চলাচলের জন্য দুটি করে লেন থাকবে। দুটি টিউবের ন্যূনতম দূরত্ব থাকবে ১১ মিটার। আর টানেলটি নদীর তলদেশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ মিটার এবং সর্বনিম্ন ১২ মিটার মাটির গভীরে নির্মিত হবে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই টানেল নির্মিত হলে সেখানে আধুনিক পর্যটনের বিকাশ গড়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব কমবে ৩৪ কিলোমিটার।
কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করবে কোন দেশ
এই টানেলটি নির্মিত হলে এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম টানেল এবং দক্ষিণ এশিয়ার নদী অববাহিকায় প্রথম ও দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ সড়ক।টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)।
কর্ণফুলী টানেল কোন জেলায় অবস্থিত
চট্টগ্রাম নগরীর নেভাল একাডেমি থেকে শুরু হয়ে টানেলটি চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড কারখানার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে নদীর দক্ষিণ তীরে পৌঁছে যাবে।কর্ণফুলী টানেল চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত।
কর্ণফুলী টানেল কত কিলোমিটার
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন একটি পানির নিচের এক্সপ্রেসওয়ে টানেল। পুরো রুটের দৈর্ঘ্য হল 9.39 কিলোমিটার (5.83 মাইল), যা সুড়ঙ্গটিকে 3.32 কিলোমিটার (2.06 মাইল) লম্বা করে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
কর্ণফুলী টানেল নির্মান ব্যায়
১০,৩৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার ৪,৪৬১.২৪ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। বাকি ৫,৯১৩.১৯ কোটি টাকা প্রকল্পের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংক প্রদান করছে, যা বাংলাদেশকে দিতে হবে ২ শতাংশ হারে। টানেলের মোট দৈর্ঘ্য 9.39 কিমি কিন্তু মূল টানেলের দৈর্ঘ্য 3.32 কিমি। টানেলের দুটি টিউব রয়েছে যার ব্যাস 10.60 মিটার, যার প্রতিটি 2.45 কিলোমিটার দীর্ঘ।
টানেলের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে শুরু হওয়া নলটির খনন কাজ শেষ হয় গত বছরের আগস্টে। ৮ মিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। টানেলের ভিতরে প্রতিটি নলের জন্য দুটি করে মোট চার লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে। অন্যদিকে আনোয়ারের প্রান্ত থেকে শুরু করে দ্বিতীয় নল খননের কাজ চলছে।
এ নলটির ১ হাজার ৬১০ মিটার খনন কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে মোটা গেটের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। টানেলের সংযোগকারী দুটি সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। আর আনোয়ারায় ৬২৮ মিটার দীর্ঘ ওভারব্রিজ নির্মাণের কাজও অনেক এগিয়েছে। স্প্যান ও গার্ডার বসানো হয়েছে।
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রাম শহরকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে। এক ভাগে রয়েছে নগর ও বন্দর এবং অপর ভাগে রয়েছে ভারী শিল্প এলাকা। কর্ণফুলী নদীর উপর ইতোমধ্যে ৩ (তিন) টি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা বিরাজমান প্রচুর পরিমাণ যানবাহনের জন্য যথেষ্ট নয়।
নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা একটি বড় সমস্যা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারীতার জন্য বড় হুমকি। এই পলি জমা সমস্যার মোকাবেলা করার জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর আর কোন সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ জন্য সরকার চট্টগ্রাম জেলার দুই অংশকে সংযুক্ত করার জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
চট্টগ্রাম হলো বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী। কর্ণফুলী নদীর মুখে অবস্থিত চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই অধিকাংশ দেশের আমদানি এবং রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রস্তাবিত কর্ণফুলী টানেল চট্টগ্রাম বন্দর নগরকে কর্ণফুলী নদীর অপর অংশের সাথে সরাসরি সংযুক্ত করবে এবং পরোক্ষভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মাধ্যমে সারা দেশের সাথে সংযুক্ত করবে। প্রস্তাবিত টানেল সাইটে নদীর প্রস্থ ৭০০.০০ মিটার এবং পানির গভীরতা ৯-১১ মিটার। প্রস্তাবিত টানেলের দৈর্ঘ্য ৩৪০০ মিটার।
কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন কবে
সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল আগামী ২৮ অক্টোবর ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে ১৫০ সেতু একদিনে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় দিলে তারিখ জানানো হবে।’
প্রেসব্রিফিংয়ে সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কর্ণফুলী টানেলের অপর নাম কী?
আরও পড়ুন ঃ
পদ্মা সেতুর টোল কোন যানবাহনে কত